Showing posts with label Machine Learning. Show all posts
Showing posts with label Machine Learning. Show all posts

05 January, 2023

নতুন সব প্রযুক্তি, যেগুলো আমাদের অবাক করবে

নতুন বছর শুরু হয়েছে, সাথে সাথে এই গ্রহের প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও অনেক বড় পরিবর্তন আসছে। ২০২৩ সালে প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো আমাদের ডিজিটাল দুনিয়ার রূপ বদ
লে দেবে, ব্যবসা বাণিজ্য এবং মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দেবে এসব প্রযুক্তি, যার শুরু হয়তো শুরু হয়ে গেছে! আমার নজরে আসা সেরকম কিছু প্রযুক্তি হল-
Artificial Intelligence

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উন্নয়ন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার আরো বেড়ে যাবে ২০২৩ সালে। No-code AI (অর্থাৎ যেখানে কোডিং না করে ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ করে প্রোগ্রাম তৈরি করা যায়) ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি আরো সহজে বুদ্ধিমান পণ্য এবং সেবা তৈরি করবে।

২০২৩ সালে মানুষের সাহায্য ছাড়া স্বয়ংক্রিয় উপায়ে শপিং এবং ডেলিভারি সেবা পাবে নতুন ট্রেন্ড। ক্রেতাদের জন্য AI এই বিষয়গুলি একদম সহজ করে দেবে। বলা যায় AI প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি ব্যবসা প্রক্রিয়াকে বদলে দিতে যাচ্ছে। বিক্রেতারা তাদের ইনভেন্টরি সামলানোর জন্য AI এর ব্যবহার অনেক বাড়াবে। তখন নতুন ধরনের সেবা যেমন অনলাইনে কিনে স্টোর থেকে ডেলিভারি নেওয়া খুব সাধারণ হয়ে যাবে।

মেটাভার্সের যাদু:

বিশাল ইন্টারনেট জগতে একটা স্থায়ী প্ল্যাটফর্মে আমরা আমাদের কাজ করবো কিংবা অন্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবোকরবো, সেই জগতকে ‘মেটাভার্স’ বলা হচ্ছে। আর ২০২৩ সাল হতে যাচ্ছে সেই গুরুত্বপূর্ণ বছর, যেটা ঠিক করে দেবে আগামী এক দশকে মেটাভার্স সেক্টরে কী হবে।

আমরা সামনের বছর আরো আধুনিক “অ্যাভাটার প্রযুক্তি” দেখতে পাবো। মেটাভার্সে প্রত্যেকের একটা নিজস্ব ডিজিটাল ভার্সন বা অ্যাভাটার থাকবে। এই অ্যাভাটার দেখতে হুবহু আমাদের মতোই হবে। মোশন ক্যাপচার কাজে লাগিয়ে অ্যাভাটার আমাদের চলাফেরা, শরীরি ভাষা, অঙ্গভঙ্গীও নকল করতে পারবে। এমনও হতে পারে মেটাভার্সে অ্যাভাটার আমাদের সাহায্য ছাড়াই ঘুরে বেড়াবে। অর্থাৎ আমরা লগ-ইন না করলেও AI চালিত অ্যাভাটার মেটাভার্স দুনিয়াতে নিজের মতো কাজ করতে থাকবে।

অনেক কোম্পানি এরই মধ্যে নিয়োগ এবং ট্রেনিং-এর কাজে এআর এবং ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। কিছু কোম্পানি নিজেদের ডিজিটাল প্রজেক্ট এর জন্য মেটাভার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। ২০২৩ সালে আমরা এই প্রবণতা আরো বাড়তে দেখবো।
 

ডিজিটাল ও বাস্তব দুনিয়ার মেল বন্ধন:

ডিজিটাল ও বাস্তব দুনিয়া মিলিত হয়ে যাওয়ার মতো ব্যাপার ২০২৩ সালে আরো বাড়তে থাকবে। ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি এবং থ্রি-ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি মূল ভূমিকা রাখবে এই মেল বন্ধনে।
ডিজিটাল টুইন হচ্ছে বাস্তব জগতের কোনো কাজ, প্রক্রিয়া বা পণ্যের ভার্চুয়াল সিমুলেশন। এই সিমুলেশন ব্যবহার করে নিরাপদ পরিবেশে কোনো পণ্যের ব্যবহার বা যে কোনো প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা যাবে। ডিজাইনার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক কাজে লাগবে এই ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে তারা ভার্চুয়াল দুনিয়ার ভেতরে বাস্তব দুনিয়ার মতো পণ্য তৈরি করতে পারবে এবং সেটা নিয়ে পরীক্ষা চালাতে পারে। বাস্তবে যা করা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। ভার্চুয়াল দুনিয়াতে পরীক্ষা করার পর ইঞ্জিনিয়াররা তাদের ডিজাইন প্রয়োজন মতো পরিবর্তন করে থ্রিডি প্রিন্টারে প্রিন্ট করে বাস্তব নমুনা দেখতে পারবে।
 
২০২৩ সালে ফ্যাক্টরি মেশিন, গাড়ি, স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল খাতে আমরা এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার দেখতে পাবো।

জিন প্রযুক্তি আরো গতি পাবে:

সামনে আমরা এমন পৃথিবী পাবো যেখানে আমাদের বিভিন্ন উপকরণ, গাছপালা এমনকি মানুষের শরীরও সম্পাদন বা এডিট করা যাবে। এই কাজে আসবে ন্যানোটেকনোলজি, যার সাহায্যে আমরা নতুন উপকরণ তৈরি করতে পারবো। এসব উপকরণে থাকবে নতুন সব বৈশিষ্ট্য। যেমন এগুলি হবে পানি নিরোধী এবং নিজের ক্ষয়পূরণে সক্ষম।

জিন সম্পাদন করার কাজ অনেকটা ওয়ার্ড প্রসেসিং এর মতো। এখানে আপনি যেমন কিছু শব্দ যোগ করেন বা বাদ দেন, একই কাজ আপনি জিনেও করতে পারেন। ডিএনএ মিউটেশনে কোনো ভুল হলে জিন এডিট করে সেটা ঠিক করা যায়। এমনকি খাবারে অ্যালার্জির সমস্যা, ফসলের উৎপাদন বাড়ানো, মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য যেমন চোখ বা চুলের রঙ বদলানোর মতো কাজও জিন সম্পাদনের মাধ্যমে করা সম্ভব।

সময়ের চাহিদা অনুসারে প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে তার মত করে, সব ধরনের সুবিধাই বাড়ছে আস্তে আস্তে। আপনি কোন পথ ধরে আগাবেন সেটা আপনার ব্যাপার। যেমন এইযে কেউ মেতে আছে টিকটক নিয়ে আবার কেউ কাজ করে যাচ্ছে কোডিং নিয়ে। সর্বশেষে বলা যায়, যদি এসব প্রযুক্তি আমরা নিরাপদ ভাবে ব্যবহার করতে পারি তবে আগামীতে একটি চমৎকার দিন অপেক্ষা করছে মানবজাতির জন্য।

মিঠুন সমদ্দার